বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন: অনলাইনে জমা দেওয়ার ধাপে ধাপে গাইড (২০২৫)
বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া প্রত্যেক করদাতার আইনগত দায়িত্ব। এটি আপনার বার্ষিক আয়, ব্যয়, বিনিয়োগ, সম্পদ ও দায়ের একটি অফিসিয়াল বিবরণী, যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR)-এ জমা দিতে হয়।
এই আর্টিকেলে পাবেন — রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম, কাগজপত্র, অনলাইন প্রক্রিয়া, কর হিসাব এবং সাধারণ প্রশ্নোত্তর।
সূচিপত্র
- আয়কর রিটার্ন কী?
- কারা আয়কর রিটার্ন দিতে বাধ্য?
- আয়কর রিটার্নে কী থাকে?
- করযোগ্য আয় গণনার নিয়ম
- রিটার্ন জমা দেওয়ার পদ্ধতি
- যে কাগজপত্রগুলো লাগবে
- রিটার্ন না দিলে জরিমানা
- রিটার্ন দেওয়ার সুবিধা
- সাধারণ প্রশ্নোত্তর
১. আয়কর রিটার্ন কী?
আয়কর রিটার্ন হলো করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয়, বিনিয়োগ, সম্পদ ও দায়ের সরকারী বিবরণী। এটির মাধ্যমে সরকার আপনার প্রকৃত আয়, প্রদেয় কর এবং সম্পদের হিসাব যাচাই করে।
২. কারা আয়কর রিটার্ন জমা দিতে বাধ্য
ব্যক্তিগত আয়ের ভিত্তিতে
- বার্ষিক আয় করমুক্ত সীমার বেশি হলে
- TIN থাকলে (TIN থাকলেই রিটার্ন বাধ্যতামূলক)
সম্পদ/লাইফস্টাইল অনুযায়ী
- বাড়ি, ফ্ল্যাট বা জমির মালিক
- গাড়ির মালিক
- ব্যাংকে ২৫,০০০ টাকার বেশি লেনদেন
- ৬ কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সংযোগ
পেশার ভিত্তিতে
- চাকরিজীবী
- ব্যবসায়ী
- ফ্রিল্যান্সার ও অনলাইন ইনকামকারী
- বিদেশে আয় করে দেশে পাঠালে
Digital Product Selling Part-1 : ই-বুক ও অনলাইন কোর্স বিক্রি করে অনলাইনে আয়ের পূর্ণ গাইড (২০২৫)
৩. আয়কর রিটার্নে কী থাকে?
ব্যক্তিগত তথ্য
- নাম, ঠিকানা, NID, TIN, মোবাইল
আয় তথ্য
- বেতন
- ব্যবসা
- ব্যাংক সুদ
- লভ্যাংশ
- ভাড়া
- ক্যাপিটাল গেইন
বিনিয়োগ ও কর ছাড়
- DPS
- জীবনবীমা
- সঞ্চয়পত্র
- Provident Fund
সম্পদ–দায় বিবরণী (IT-10B)
- স্থাবর সম্পদ
- চলতি সম্পদ
- ব্যাংক ব্যালেন্স
- গাড়ি
- ঋণ
উৎসে কর কর্তন (TDS)
বেতন, ব্যাংক, প্রতিষ্ঠানের উৎসে কর কাটা অংশ হিসাব করতে হয়।
৪. করযোগ্য আয় গণনার নিয়ম
করযোগ্য আয় নির্ণয় হয় নিচের ফর্মুলায়:
মোট আয় – বিনিয়োগ/কর-ছাড় = করযোগ্য আয়
এরপর NBR-এর নির্ধারিত স্ল্যাব অনুযায়ী আয়কর নির্ধারণ করা হয়।
৫. রিটার্ন জমা দেওয়ার পদ্ধতি
পদ্ধতি ১: অনলাইনে (e-Return)
- etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটে একাউন্ট তৈরি
- লগইন করে Return Submission
- Income, Exemption ও Asset তথ্য পূরণ
- কর হিসাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে হবে
- Chalan তৈরি করে অনলাইনে কর পরিশোধ
- Return Submit
- Acknowledgment Receipt ডাউনলোড
পদ্ধতি ২: অফলাইনে
- IT-10 ও IT-10B ফর্ম পূরণ
- প্রমাণপত্র সংযুক্ত
- কর অফিসে জমা
৬. রিটার্ন জমা দিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- TIN সার্টিফিকেট
- NID
- বেতনের সার্টিফিকেট
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- বিনিয়োগ প্রমাণপত্র (DPS, সঞ্চয়পত্র)
- বাড়ি/গাড়ির কাগজপত্র
- আগের বছরের রিটার্ন
৭. রিটার্ন না দিলে জরিমানা
- ন্যূনতম ৫,০০০ টাকা জরিমানা
- অতিরিক্ত কর ও সুদ
- NBR নোটিশ
- ভিসা/লোন প্রক্রিয়ায় বাধা
৮. রিটার্ন জমা দেওয়ার সুবিধা
- ব্যাংক লোন সহজে পাওয়া যায়
- বিদেশ ভিসা সহজ হয়
- সম্পদের বৈধতা প্রমাণ হয়
- ব্যবসায় টেন্ডার পেতে সহায়তা করে
২০২৫ সালে অনলাইনে আয় করার সেরা ১০টি উপায়
সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)
চাকরিজীবীদের কি আয়কর রিটার্ন দিতে হয়?
হ্যাঁ। বেতন থেকে উৎসে কর কাটা হলেও রিটার্ন দিতে হবে।
অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে কত সময় লাগে?
প্রায় ২০–৩০ মিনিট।
রিটার্ন জমা কি ফ্রি?
NBR এর মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফ্রি।
কোন কোন ডকুমেন্ট লাগে?
TIN, NID, বেতন সার্টিফিকেট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বিনিয়োগ প্রমাণপত্র।
